ঢাকা ২৫শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই ফাল্গুন, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:২২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১০, ২০২০
সানডেসিলেটডটকমঃ সিলেট নগরের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত বরখাস্ত এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে গত সোমবার (৯ নভেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে কানাইঘাট উপজেলার ডোনা সীমান্ত এলাকায় স্থানীয় লোকজন তাকে ধরে হাত-পা বেঁধে পুলিশে দেয়। জানা গেছে, আটক হবার পর আকবর তাকে ছেড়ে দিতে সংশ্লিষ্টদের ২০ লাখ টাকার লোভ দেখিয়েছিলেন।।
আকবারের আটককারীদের মধ্যে একজন বলেন, আকবর ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে প্রাণভিক্ষা চেয়েছিল। জবাবে আমরা বলেছি, ‘তুমি দেশের শত্রু, তোমারে বাঁচাইয়া রাখা যাবে না। টাকার মূল্যের চেয়ে বিচারের মূল্য অনেক বেশি’।
বদনামি হওয়া ও বিপদে পড়ার ভয়ে তারা আকবরকে ছেড়ে দিতে রাজি হননি বলে জানান সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার এই বাসিন্দা।
আকবরকে আটকের বিষয়ে তিনি বলেন, আসামের শিলচরে অবস্থানরত তার একজন আত্মীয়কে দিয়ে প্রথমে আকবরকে আটক করা হয়। পরে তাকে ভারতীয় খাসিয়াদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। খাসিয়াদের হাত থেকে তিনিসহ পাঁচ বাংলাদেশি আকবরকে নিয়ে আসেন। এরপর সোমবার সকালে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ওই আত্মীয়ের বরাত দিয়ে তিনি আরো বলেন, তার আত্মীয়ই প্রথম এসআই আকবরের সন্ধান দেয়। শিলচরে গত কিছুদিন ধরে অবস্থানকারী আকবর তার আত্মীয়কেও পরিচয় জানাননি। ফেসবুকের ছবি দেখে তার ওই ব্যক্তি প্রথমে আকবরকে শনাক্ত করেন।
তিনি বলেন, (ওই আত্মীয়) আমাকে ফোনে বিষয়টি জানানোর পর, আমি তাকে ম্যাসেঞ্জারে ফটো পাঠাতে বলি। ছবি দেখার পর তাকে বলি, ‘ঠিক আছে।’ এর মধ্যে আকবর গৌহাটি যাবে বলে (আমার আত্মীয়কে) জানায়। আমি বলি, যেভাবে হোক তার সাথে বন্ধুত্ব করে আমাকে জানাও। এর মধ্যে আমি পুলিশ প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করি। ওরা (পুলিশ) বলে, ‘পারলে আনো’। রোববার মেঘালয় রাজ্যের সোনাপুর ব্রিজ এলাকায় খাসিয়া দিয়ে তাকে আটক করানো হয়।
সিলেটের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. ফরিদ উদ্দিন জানান, জেলা পুলিশের সরাসরি তত্ত্বাবধানে সোমবার (৯ নভেম্বর) সকাল ৯টায় কানাইঘাটের ডনা সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন আকবর। পুলিশের কিছু ‘বিশ্বস্ত বন্ধুর’সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উল্লেখ্য যে, গত ১১ অক্টোবর ভোর রাতে রায়হানকে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করা হয়। পরে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সকাল ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে তার মৃত্যু হয়।
রায়হান ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে মারা গেছেন পুলিশের তরফ থেকে দাবি করা হলেও নিহতের পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ ছিল পুলিশ ধরে নিয়ে ফাঁড়িতে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করেছে।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরিবারের অভিযোগ ও মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের তদন্ত দল ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর সত্যতা পেয়ে জড়িত থাকায় ইনচার্জ আকবরসহ চার পুলিশকে বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করেন।
সানডেসিলেটডটকম/পূর্বপশ্চিমবিডি/অ-ভি
About Us Contact Us Privacy Policy Terms and Conditions
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি