ঢাকা ৬ই মার্চ, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে ফাল্গুন, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:৩১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৮, ২০২০
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দেশে করোনা ভাইরাসের ফলে ব্যবসার বাণিজ্যের বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়। এর ফলে বিপাকে পড়ে যান অনেক তরুণ-তরুণী ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশে সম্প্রতি অনলাইন ব্যবসা বা ই-কমার্স অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণে এই সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।
এই বৈশ্বিক মহামারির মধ্যেও অনেকেই ই-বাণিজ্যের সফলতা অর্জন করেছেন তেমনি এক তরুণ উদ্যোক্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান খান। অনলাইনে ই-বাণিজ্য করে মানুষের মাঝে সেবা পৌঁছে দিয়ে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) এর পক্ষ থেকে টপ কন্ট্রিবিউটরের পুরস্কার পান তিনি। যা সিলেটের কেউ এই প্রথম এ পুরস্কার অর্জন করেন। মো. মোস্তাফিজুর রহমান খান সিলেট নগরীর বালুচরের সোনারবাংলা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মো. মাহবুবুুর রহমান ও ফাতেমা বেগমের ৩য় ছেলে।
১৯ ডিসেম্বর ঢাকায় একটি অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে তাকে এই পুরস্কার তুলে দেন ই-ক্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এম. শাহাব উদ্দিন শিপন ও ই-ক্যাবের জেনারেল সেক্রেটারি মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল।
২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের অধিনে “ই-বাণিজ্য করবো, নিজের ব্যবসা গড়বো” প্রকল্পে ট্রেনিং নেন মোস্তাফিজ। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে অনলাইনের মাধ্যমে শুরু করেন চা-পাতা ব্যবসা। তার প্রতিষ্ঠিত সুরমা শপের মাধ্যমে মানুষের মাঝে চা-পাতা বিক্রি করতেন। প্রতিনিয়ত তার এখান থেকে ১৫/২০জন লোক চা পাতা নিয়ে ব্যবসা করে সাবলম্বী হচ্ছেন। চলতি বছরের মার্চের দিকে দেশে বৈশ্বিক মহামারি করোনা দেখা দিলে তিনি চিন্তায় পড়ে যান। তিনি ভেঙ্গে না পড়ে পরিকল্পনা করেন কিভাবে তার ব্যবসা চালিয়ে যাবেন। তিনি পরিকল্পনা করেন কিভাবে অনলাইনে ই-বাণিজ্য করে মানুষের মাঝে সেবা পৌঁছে দেয়া যায়। আর সেই থেকে তিনি ‘সুরমা শপ’ এর মাধ্যমে শুরু করেন অনলাইনে চায়ের ব্যবসা। বর্তমানে তিনি পরিবারকেও সহযোগিতা করছেন।
অনলাইন ব্যবসায় নেমে কয়েক মাসের মাথায় বিনিয়োগও বাড়ান মোস্তাফিজ। মাসে তার ব্যবসা ছাড়িয়ে গেছে মাসে এখন প্রায় লাখ টাকার লেনদেনে। নিষ্টা আর পরিশ্রমের পাশাপাশি পণ্যের গুণগত মান রক্ষা করায় মাত্র কয় মাসেই উদ্যোক্তা হিসেবে সাফল্যের দেখা পেয়েছেন মোস্তাফিজ।
মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, তিনি তার প্রতিষ্ঠিত সুরমা শপ নামক ‘টি গোল্ড’ এর মাধ্যমে যা লাভ হয়, তার অর্ধেক অংশ বিলিয়ে দেন মানব সেবা ফান্ডে। তিনি এখনও তার ‘টি গোল্ড’ এর অর্ধেক অংশ মানব সেবা ফান্ডে দিয়ে আসছেন। তিনি সব সময় অনলাইনে অনেক সময় কাটাতেন। আর অনলাইনে সময় কাটাতে কাটাতে হঠাৎ চিন্তা করলেন কিভাবে অনলাইনে ই-বাণিজ্যের মাধ্যমে নিজের ব্যবসা সম্প্রসারণ করা যায়। সেই চিন্তা ভাবনা থেকেই অনলাইনে ব্যবসা সম্প্রসারণে কাজ শুরু করেন মোস্তাফিজ।
মো. মোস্তাফিজুর রহমান খান জানান, আমাকে সবসময়ই পারিবারিকভাবে সার্পোট দিচ্ছেন আমার মা-বাবা ভাই বোন। তারা সব সময় আমাকে সাহস ও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। তিনি জানান, তার জীবনে সফলতার অন্যতম দুজন ব্যক্তি হচ্ছেন মাহফুজা মজিদ এবং রাকিব আহমদ (ভাইস চেয়ারম্যান স্ট্যান্ডিং কমিটি ই-ক্যাব)। তিনি জানান, রাকিব আহমদ তাকে সবসময়ই পেইজ এবং ওয়েবসাইটের বিষয়ে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন।
তিনি বলেন, এই বৈশ্বিক মহামারি করোনা হতাশাকে পেছনে ফেলে বড় স্বপ্ন দেখছি। আমি এখন দেশের ৬৪ জেলার চা সরবরাহ করছি। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবে সহায়তা পেলে এ স্বপ্ন পূরণে আরো এগিয়ে যাবো। তিনি জানান, তার স্বপ্ন ব্যবসাকে বড় পরিসরে নিয়ে যাওয়া। এরইমধ্যে দেশের ক্রেতাদের পাশাপাশি প্রবাসে থাকা অনেক বাংলাদেশিও তার থেকে পণ্য নিচ্ছেন বলে জানান সিলেটের ছেলে মোস্তাফিজ। মোস্তাফিজ সকলের কাছে দোয়া চান, যাতে তিনি তার ব্যবসাকে আরো বড় পরিসরে নিয়ে যেতে পারেন।
সানডেসিলেটডটকম /২৮ ডিসেম্বর ২০২০
About Us Contact Us Privacy Policy Terms and Conditions
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি