ঢাকা ২৮শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই ফাল্গুন, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:১১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৩, ২০২০
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নগরীর আম্বরখানায় নির্মানাধীন ড্রেনের উন্মুক্ত খাদে পড়ে গত ১০ই ডিসেম্বর কবি আব্দুল বাছিত মোহাম্মদ-এর মৃত্যু হয়। এই মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যাক্তিদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া, নগর উন্নয়ন ও সংস্কার কাজে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বেষ্টনী রাখা এবং নিহত কবির পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানিয়ে সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলন মানবন্ধন করেছে।
রোববার (১৩ ডিসেম্বর) বিকালে ৩ ঘটিকায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সম্মুখে সংক্ষুব্ধ নাগরিকবন্ধন কর্মসুচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কবি আব্দুল বাছিত মোহাম্মদের মৃত্যু নিছক দূর্ঘটনা নয়, এই মৃত্যুর জন্য সিলেট সিটি কর্পোরেশনদায়ি দায়ী।
সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি আল-আজাদ-এর সভাপতিত্বে ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন {ইমজা}-র সাধারণ সম্পাদক সজল ছত্রীর সঞ্চালনায় কর্মসুচিতে মূল বক্তব্য রাখেন সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল করিম কিম।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নিহত কবির ছোট ভাই মোহাম্মদ এহিয়া আহমেদ, সাংস্কৃতিক সংগঠক এনামুল মুনির, ভাষা শহীদ মতিন উদ্দিন চৌধুরী যাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রত্নতত্ত্ব সংগ্রাহক ডা. মোস্তাফা শাহজামান চৌধুরী বাহার, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক তাহমিনা ইসলাম, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক ছামির মাহমুদ, বঙ্গবন্ধু গবেষণা সংসদের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি বিধান সরকার, দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’র সংগঠক দেবাশিস দেবু, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভানিটির ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক প্রনব কান্তি দেব, ভুমিসন্তান বাংলাদেশের সমন্বয়ক আশরাফুল কবির, মহানগর জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম চৌধুরী, লেখক ও আইনজীবী আব্দুল মুকিত অপি, প্রকাশক রাজিব চৌধুরী, সাংস্কৃতিক কর্মী রাজিব রাসেল, অদিতি দাস, রুবেল মিয়া প্রমুখ।
প্রায় ঘন্টাব্যাপি চলা এই কর্মসুচিতে বক্তারা বলেন, নগর উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করার নামে সিলেট মহানগরীতে একটি হযবরল অবস্থা তৈরি হয়েছে। দিনের পর দিন ভাঙ্গা-গড়ার খেলা চলছে। ভাঙ্গা-গড়ার শত কোটি টাকার কর্মযজ্ঞে পথচারীদের নিরাপত্তার জন্য আধুনিক নিরাপত্তা বেষ্টনী দূরে থাক, সামান্য লাল কাপড়ের নিশানা পর্যন্ত থাকেনা । সিলেট সিটি কর্পোরেশনের এই অব্যাবস্থাপণার মাশুল দিতে হয়েছে একজন কবিকে। এই নগরের উন্নয়ন কর্মের গর্তে পড়ে গত ৯ই ডিসেম্বর নগরীর আম্বরখানা এলাকায় মারাত্মক ভাবে আহত হয়েছিলেন কবি ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল বাছিত মোহাম্মদ। পরদিন সিলেট ওসমানী মেডিক্এল কলেজে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এই মৃত্যুতে সিলেটের সর্বস্থরের মানুষ ব্যাথিত হয়েছে। আমরা ব্যাথিত ও সংক্ষুব্ধ হয়েছি।
সভাপতির বক্তব্যে আল আজাদ সিলেট সিটি কর্পোরেশনের হযবরল উন্নয়নকর্মে কবি ও শিক্ষক আব্দুল বাছিত মোহাম্মদ-এর মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য দায়ি ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং কবির পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানান।
কবি আব্দুল বাছিত মোহাম্মদ-এর পরিবারের পক্ষ থেকে নিহতের ছোট ভাই মোহাম্মদ এহিয়া আহমেদ বলেন, আমার পরিবারের মত এই নগরীর অপরিকল্পিত উন্নয়নে আর কেউ যেন প্রিয়জনকে না হারান সেই দাবি জানাই।
মূল বক্তব্যে সংগঠনের সমন্বয়ক আব্দুল করিম কিম বলেন, দুর্ঘটনার পাঁচদিন অতিবাহিত হতে চললো। সিলেট সিটি কর্পোরেশন থেকে অদ্যাবধি এই দুর্ঘটনার দায় স্বীকার করে কবির পরিবারকে আনুষ্ঠানিক সমবেদনা প্রকাশ করেনি। এমনকি আহত কবিকে উন্নত চিকিৎসা প্রদানে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতার কোন তথ্য আমাদের জানা নেই। আর এমন হওয়ার কারণ নাগরিকদের নিরবতা। এই তুর্ঘটনার সাথে সাথেই কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার প্রয়োজন ছিল। তাহলে কবি’কে বাঁচাতে সর্বচ্চো চেষ্টা করা হতো। আর এই দুর্ঘটনায় মৃত্যুর জন্য কবির পরিবারের সামনে হাজির হয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জোড় হাতে ক্ষমা প্রার্থনা করতেন। কিন্তু তা হয়নি। এ অবস্থায় সিলেটের নাগরিকদের ব্যাতিক্রমি সংগঠন সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলন এই সংক্ষুব্ধ নাগরিকবন্ধন কর্মসুচির আয়োজন করেছে।
About Us Contact Us Privacy Policy Terms and Conditions
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি